মনোযোগের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করো | Types of Attention in Bengali
উত্তর:
মনােযােগ
মনােযােগ হল এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া যার সাহায্যে আমরা কোন একটি বিশেষ বিষয়ের প্রতি আমাদের মনকে নিবিষ্ট করে ওই বিষয় সম্বন্ধে স্পষ্ট জ্ঞান লাভ করতে পারি।
মনােযােগের শ্রেণীবিভাগ :
মনােযােগ মনােযােগের বিষয়বস্তু, স্থায়িত্ব, প্রকৃতি প্রভৃতির উপর ভিত্তি করে মনােযােগকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলি হল –
1) ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ :
যখন কোন উদ্দীপকের প্রতি আমরা ইচ্ছাকৃত ভাবে মনােযােগ দিই তখন তাকে ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ বলে। এই জাতীয় মনােযােগ স্বতঃস্ফূর্ত, স্বেচ্ছাপ্রণােদিত ও সক্রিয়। এই জাতীয় মনােযােগ তখনই প্রয়োজন হয় যখন আমাদের অপেক্ষাকৃত অধিকতর আকর্ষণীয় কোন উদ্দীপককে অগ্রাহ্য করে কম আকর্ষণীয় কোন বিষয়ের প্রতি মনােযােগ দিতে হয়।
টিভিতে ক্রিকেট খেলা চলছে, সেই সময় খেলা দেখতে ইচ্ছে করছে কিন্তু তখন যদি কেউ নিজের ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে পরীক্ষার পড়ায় মনােযােগ দেয়, তার পরীক্ষার পড়ার প্রতি মনােযােগ নেই শুধুমাত্র পরীক্ষায় পাশ করার জন্য পড়ার প্রতি মনােযােগী হয়, তখন তাকে ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ বলে।
ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে – i) গুপ্ত ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ ii) ব্যক্ত ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ।
i) গুপ্ত ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ: যখন কোন বিষয়ে মনােযােগ দেওয়ার জন্য একবার চেষ্টা প্রয়োজন হয় তখন তাকে গুপ্ত ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ বলে। এই ধরনের মনােযােগ এর জন্য ইচ্ছাশক্তি বা সংকল্পের প্রয়োজন হয়। যেমন – যদি কেউ একবার চেষ্টা করে পড়ায় মনােযােগী হতে পারে তখন তাকে গুপ্ত ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ বলে।
ii) ব্যক্ত ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ: যখন কোনাে কাজে মনােযােগ বজায় রাখার জন্য বারবার চেষ্টা করতে হয় তখন তাকে ব্যক্ত ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ বলে। যেমন- যদি কারাে পড়ার সময় তার মনােযােগে বারবার ছেদ পড়ে এবং তাকে বারবার পাঠের জন্য চেষ্টা করতে হয় তখন তাকে ব্যক্ত ইচ্ছা প্রণােদিত মনােযােগ বলা হয়।
2) ইচ্ছা নিরপেক্ষ মনােযােগ :
যখন উদ্দীপক বা পরিস্থিতির তাগিদে আমরা মনােযােগ দিতে বাধ্য হই, তখন তাকে ইচ্ছা নিরপেক্ষ মনােযােগ বলে। এর জন্য আমাদের কোন চেষ্টা করতে হয় না। এটি স্বতঃস্ফুর্ত ভাবেই ঘটে। এই ধরনের। মনােযােগ ভয় প্রবৃত্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। যে কোনাে তীব্র আলাে, গন্ধ, শব্দ ইত্যাদি যা আমাদের স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে মনােযােগ আকর্ষণ করে।
যেমন – আমাদের পড়ার সময় যদি কোন জোরে আওয়াজ হয় বা বিদ্যুৎ চমকায় তখন আমাদের মনােযােগ ওই দিকে আপনা আপনি চলে যায়। এজন্য কোন চেষ্টার প্রয়োজন হয় না।
ইচ্ছা নিরপেক্ষ মনােযােগ কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে – i) প্রবৃত্তি প্রযুক্ত মনােযােগ ও ii) স্বতঃস্ফূর্ত মনােযােগ।
i) প্রবৃত্তি প্রযুক্ত মনােযােগ: যখন উদ্দীপকের কোন বিশেষ গুণ বা তীব্রতার জন্য আমরা সেই বিষয়ে মনােযােগ দিই তখন তাকে প্রবৃত্তি প্রযুক্ত মনােযােগ বলে।
যেমন – খিদার তাড়নায় খাদ্যবস্তুর প্রতি মনােযােগ দেওয়া।
ii) স্বতঃস্ফূর্ত মনােযােগ: যখন কোন উদ্দীপকের উপস্থিতিতে আমাদের মনােযােগ স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে ওই বিষয়ের প্রতি চলে যায় তখন তাকে স্বতঃস্ফূর্ত মনােযােগ বলা হয়। এই প্রকার মনােযােগ সেন্টিমেন্ট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
যেমন – পড়ার সময় হঠাৎ আমাদের বাড়িতে কোন আত্মীয় এলেন এবং তখন আমাদের মনােযােগ ওই আত্মীযের প্রতি স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে চলে যায়।
আরো পড়ুন
মনোযোগ কাকে বলে | মনোযোগের প্রকৃতি গুলি কি কি | Attention in Bengali